ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে অনেক প্রশ্ন, আমি প্রায়ই কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হই | নতুনদের আগ্রহ দ্যাখে আমি অনেক আনন্দিত হই| প্রায়ই ইমেইল পাই, যারা গ্রাফিক ডিজাইন শিখতে চান বা কিছু প্রশ্ন করে থাকেন| প্রশ্ন গুলো নিম্ন রূপ:
অনলাইনে কি ধরনের কাজ করা যাই? কোন কাজে করে অনলাইনে বেশি টাকা আয় করা যাই? কোন কাজ অল্প সময়ে শিখা যায়? কিভাবে অল্প সময়এ অনলাইনে টাকা উপার্জন করা যায়? কিভাবে অল্প সময়ে অনলাইনে আয় করে নিজের ছাত্রজীবনের খরচ মিটানো যাই? কিভাবে অনলাইনের টাকা লোকাল ব্যাংক এ বা হাতে পাওয়া যাই? কাজ করিয়ে টাকা দেয়না এমন হয়? এমন অনেক প্রশ্ন, তবে আমি আজকের ব্লগ এ কোন পাশায় অনলাইনে কাজ পাওয়া যাই টা নিয়া লিখতে যাচ্ছি 🙂
অনলাইনে সকল ধরনের / পেশার কাজ করেই টাকা উপার্জন করা যাই, তবে যে পেশায়া ই কাজ করবেন সেটিতে আপানের ভালো দক্ষতা থাকে হবে| আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ ই মাল্টিট্যালেন্টেড, উনারা একসাথে একাউন্ট বিভাগের কাজ করেন পাশাপাশি ফটোশপ,ইলাস্ট্রেটর, এইছ.টি.এম.এল, পিএ.ইচস.পি, সি.এস.এস, ওয়ার্ডপ্রেস, জুমলা সব কাজে দক্ষ! ওয়াও! সুপারম্যান! হুহ?
গ্রাফিক ডিজাইন এবং আউটসোর্সিং কোর্স প্রতারনা
ফ্রিল্যান্সিং এবং আউটসোর্সিং এর ট্রেনিং সেন্টারগুলো যেভাবে প্রতারণা করে সে সকল বিষয়ে আপনাকে সচেতন হতে হবে। আসুন কমন কিছু বিষয়ে আলোচনা করা যাক, যাতে করে আপনি প্রতরণার হাত থেকে রক্ষা পান এবং ট্রেনিং সেন্টারের কোর্স থেকে বেস্ট আউটপুট পেতে পারেন।
উনি অনেক কিছু জানেন, কিন্তু অনলাইনে আয় করার জন্যে এত বিষয় জানতে হয় না, একটি বিষয়ে ভালো জানলেই টাকা আয় করতে পারেন| অনেক বিষয় জানেন কোনটিতে ভালো দক্ষতা না থাকে তাহলে আপনি নতুন করে শুরু করুন, একটা পছন্ধের পেশা / বিষয় নির্বাচন করুন যা হবে আপনার পরিচিতি (identity ), বাকি বিষয় গুলা আপনার অলংকার| আপনার নাম কিন্তু জনাব রহিম, হতেপারে আপনি আপনার মায়ের কাছে ‘গাব্লু’, অথবা প্রেমিক/প্রেমিকার কাছে ‘বাবু’, আর বাকি সবারকাছে আপনি রহিম| স্কিল্ল এর বেলায় ও সেম| আপনি নিদ্ধারন করুন কোনটিকে পেশা হিসাবে নিবেন|
নিচের বিষয় গুলা দাখুন, এইগুলার মধ্যে আপনি কোনটি ভালো পারেন? এইসব স্কিল্ল এ কাজ করে অনলাইনে অর্থ উপার্জন করতে পারবেনঃ
১) ওয়েব ডেভেলপমেন্টে ফ্রিল্যান্সিং
অনলাইন পেশা হিসাবে আমি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কে রাখবো সবার উপরে| বর্তমান যুগে প্রতীতি বেক্তি বা প্রতিষ্ঠান এর জন্যে ওয়েবসাইট এর প্রয়োজন হচ্ছে, ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে তাদের পরিচিত ছড়িয়েপড়ে বিশ্বজুড়ে| এই চাহিদা সুধুই ঊর্ধ্বগামী| স্মরণ রাখবেন যে আপনাকে দিয়ে তার ওয়েবসাইট ডেভেলপ করবে প্রবর্তিতে সে আপনাকেই আবার হায়ার করবে তাদের ওয়েবসাইটই আপডেট করার জন্যে, বা প্রতিনিয়ত আপডেট রাখার দায়িত্ব পানার উপরই পরবে, যার সুবাধে আপনি পাচ্ছেন দীর্ঘমেয়াদি ক্লায়েন্ট| ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শিখতে হলে আপনাকে প্রাথমিক ভাবে জানতে হবেঃ HTML, CSS, Java Script, এর পর রেস্পন্সিভ ওয়েবসাইট এর জন্যে জানতে হবে Bootstrap| ড্যনামিক ওয়েবসাইট এ কাজ করতে হলে আপনাকে জানতে হবে PHP অথবা ASP.NET এর যেকোনো একটি| পাশাপাশি তথ্য সংরেহের জন্যে জানতে হবে database হিসাবে MySql
এতকিছু শিখতে হবে দ্যাখে ভয় পাবেনা| আপনাকে সবগুলা শিখতে হবে না| HTML, CSS, Java Script এই তিনটা জানলে আপনি Bootstrap ও জানবেন| ওয়েবসাইট ডিজাইন করার জন্যে এই ৩ টাই যথেষ্ট|
২) ডিজাইন এন্ড মাল্টিমিডিয়ে আউটসোর্সিং
আমি নিজেই একজন ডিজাইনার, আমার পছন্ধের পেশা| বর্তমানে এই ক্যাটাগরিতে কাজকরার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তালিকার উপরে| আপনিও যুক্ত হতেপারেন এই দলে| এই ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েবসাইট ডিজাইন, ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইন, প্রিন্ট ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং ইত্যাদি | এদের মধ্যে ভিডিও এডিটিং ছাড়া বাকি শবগুলু করতে পারবেন যদি আপনি যদি ফটোশপ আর ইলাস্ট্রেটর জানেন, তবে এর সব গুলো আপনাকে জানতে হবে না| সুধু মাত্র প্রিন্ট ডিজাইন অথবা ওয়েব ডিজাইন আর নাহয় ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইন একটা জানা এ যথেষ্ট| ভিডিও এডিটিং এর জন্যে জানতে হবেঃ এডোবি প্রিমিয়ার প্রো অথবা সনি ভেগাস, আপনি যদি মোশনগ্রাফিক্স এ কাজ করতেচান তাহলে জানতে হবে এডোবি আফটারইফেক্ট|
স্মরণ রাখতে হবেঃ আপনি কেবল ফটোশপ আর ইলাস্টেটর জানলেই ডিজাইনার হয়ে যাবেন এমন না| ডিজাইন হচ্ছে creativity, নতুন কিছু তৈরি করার ক্ষমতা থাকতে হবে|
৩) রাইটিং এবং ট্রান্সলেসানঃ
আপনার লেখার হাত যদি ভালো হয় আপনি এই পেশার জন্যে যোগ্য| আপনি ইংলিশ এ লেখাপড়া করে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতেহবে না| আপনকে কোন ওয়েবসাইট এর ব্লগ বা বইয়ো লিখতে বলা হতে পারে| আপনার যদি ইংলিশে ভালো দক্ষতা থাকে দারি না করে ঝাপাইয়া পড়ুন| আপনার জন্যে আছে অপার সম্ভাবনা| আপনি যদি ইংলিশ এর পাশাপাশি দ্বিতীয় কোন ভাষা জানেন তাহলে আপনকে রুখার মত কেউ নেই! আপনাকে ইংলিশ থকে অন্য ভাসায় ট্রান্সলেট করতে বলা হতে পারে অথবা অন্য ভাষা থেকে ইংলিশ| টাকা উপার্জন করা অনেক সহজ, তাইনা?
৪) সেলস এন্ড মার্কেটিংঃ
এইটই একটি চমৎকার পেশা! এই পেশায় আপনি যেই আয় করবেন তা হচ্ছে passive income| এর মানে হচ্ছে আপনি সরাসরি কিছুই করছেননা কিন্তু আপনি টাকা উপার্জন করছেন, কিন্তু গ্রাফিক্স ডিজাইন এর বেলায় আপনি সরাসরি কাজ করলেই টাকা পাচ্ছেন, সেইটা হচ্ছে acitiv income| তবে গ্রাফিক্স ডিজাইন এর মাধ্যমে ও pessiv income করা যাই, সেইটা বলবো গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়া আলাধা কোন ব্লগ এ| অনলিনে sales & Marketing বলতে মূলত Affeliate Marketing কে ই বুঝানো হয়| আফেলিএট মার্কেটিং করতে হলে আপনার থাকতে হবে একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট, যেইখানে আপনি অন্যের পণ্য প্রমোশন করবেন আর মাস শেষে গুনবেন হাজার হাজার ডলার 🙂
শুধু Affeliate Marketing করে মাসে $1000 আয় করে এমন অনেক বাংলাদেশি আছে| প্রবর্তিতে আফেলিয়েট মার্কেটিং নিয়া বিস্তারিত একটি ব্লগ লিখবো|
৫) এডমিনিসট্রেটিভ সাপোর্টঃ
এই পেশাটি বাংলাদেশের অনেকের কাছেই জনপ্রিয়, বহুল পরিচিত DATA ENTRY নামে| এই কাজটি জন্যে কম্পিউটার আর ইন্টারনেট এর সাধারণ ধারনা থাকলেই করতে পারবেন| তবে স্কিল্ল প্রয়োজন হয়না বলে এই কাজে আগ্রহীর সংখ্যা যেমন বেশি, পারিশ্রমিক তেমনি কম| ডাটা এন্ট্রি বলতে অনেক কাজ হতেপারে| আপনার বুঝার জন্যে আমি কিকটি উধারন দেইঃ আপনাকে বলাহয়তে পারে ইন্টারনেট থাকে একটা দাশের ইউনিভার্সিটি গুলোর তালিকা করতে, তাদের tutiofee, academic session ও অন্যান্য তথ্য একটা এক্সেল সীট এ সংগ্রহ করতে| বলতে পারে এক্সেল সীট থাকে সকল তথ্য তাদের ওয়েবসাইট এর Database এ ইনপুট দিতে| আবার বলা হতেপারে হতেপারে নিদ্ধারিত কিছু তথ্য দিয়ে ওয়েবসাইট নিমিত আপডেট করতে, এমন অসংখ্য কাজ|
৬) বিজনেস সার্ভিসঃ
এই ক্যাটাগরি তে, হিসাব রক্ষক, হিউম্যান রেসোস ম্যানেজমেন্ট, লিগাল সাপোর্ট, বিজনেস কনসালটিন, প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, পেরোল ইত্যাদি কেটাগরিতে কাজ করতে পারেন|
উপররে বিষয় গুলা ছাড়াও নেটওয়ারকিং এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট যারা জানেন তাদের জন্যে অনলাইনে উপার্জন সম্ভব| এই বিষয়ে বিস্তারিত লেখার অনাবশ্যক কারণ যারা সফটওয়্যার তৈরি করেন তারা ফ্রীলাঞ্চিং সম্পর্কে ও ভালো ধারনা রাখেন
এতক্ষণে আপনি জানেগাছেন, কি কি পেশায় ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করা যাই| তবে স্মরণ রাখবেন যেইটাই শিখবেন ভালো ভাবে শিখবেন কারণ আপনি একই পেশার আরও হাজারো ফ্রীলেংচারদের সাথে প্রতিযোগিতায় নামছেন|
ফ্রিল্যান্সিং কোর্স বা আউটসোর্সিং বিষয়ে প্রশ্ন থাকলে অথবা আর্টিকেলটি সম্পর্কে মতামত জানাতে কমেন্ট করুন। আপনাকে রিপ্লাই দিয়ে সহযোগিতা করতে পারলে নিজেকে ভাগ্যবান অনুভব করব
অন্যান্য যে পোস্টগুলো আপনার পড়া প্রয়োজন
- ফ্রিল্যান্সিং কে পেশা হিসাবে নিতেহলে যেই বিষয় গুলা অবশ্যই জানতে হবে
- গ্রাফিক ডিজাইন কিভাবে শিখবেন? কোথায় শিখবেন?
- জানুন কিভাবে ডিজাইনারদের ভবিষ্যত অসাম হয়!
- গ্রাফিক রিজার্ভ মার্কেটপ্লেস নন-এক্সক্লুসিভ অথরশিপ (বিস্তারিত)
- ফ্রিল্যান্সার দের কাজের জন্যে কেমন কম্পিউটার প্রয়োজন?
- আপনি যে কারনে ডিজাইনার হতে পারবেন না (Case Study)
- জানুন কিভাবে ডিজাইনারদের ভবিষ্যত অসাম হয়!